এ সপ্তাহের কৃষি ,ফাল্গুন (৩য় সপ্তাহ)

ফাল্গুন মাস বছরের শেষ ঋতু । শীতের পরে প্রকৃতিতে রুপ,বর্ণ,গন্ধ,আর অপরূপ সৌন্দর্য নিয়ে আগমন ঋতুরাজ বসন্তের ।ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আমাদের কৃষিতে ও পরিবর্তন সূচিত হয়। কৃষকরা উদ্যমী হয়ে নতুন চাষাবাদে আগ্রহি হয়। কৃষক ভাইবোনেরা আসুন জেনে নেই এই সপ্তাহের কৃষিতে করণীয় কি আছে।

বোরো ধানঃ

 ধানের চারার বয়স ৫০-৫৫ দিন হলে ইউরিয়া সারের শেষ কিস্তি উপরি প্রয়োগ করতে হবে।সার দেয়ার আগে আগাছানাশক দিয়ে জমির আগাছা পরিস্কার করতে হবে এবং জমি থেকে পানি সরিয়ে দিতে হবে।পোকা দমনের জন্য নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করতে হবে এবং সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে (আলোক ফাদ পেতে,পোকা ধরার জাল ব্যবহার করে,ক্ষতিকর পোকার ডিমের গাদা নষ্ট করে,উপকারী পোকা সংরক্ষন করে,ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করে দেয়া).

গমঃ    

গমের শিষের দানা দাঁত দিয়ে কাটলে যদি কট কট শব্দ হয় তবে বুঝতে হবে গম কাটার সময় হয়েছে।কম্বাইন হারভেস্টার এর মাধ্যমে সকালে অথবা পড়ন্ত বিকালে ফসল কাটতে হবে। মনে রাখতে হবে ফসল কাটার পর বীজ রোদে শুকিয়ে সংগ্রহ করে ভালো করে ঠাণ্ডা করে সংরক্ষন করতে হবে।

ভুট্টা (খরিপ)ঃ

খরিপ মৌসুমে ভুট্টা চাষ করতে হলে এখনই বীজ বপন করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় যত্ন নিতে হবে।এই মৌসুমে চাষ উপযোগী ভুট্টার জাতের নাম হলোঃ বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৪, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৫, বারি হাইব্রিড ভুট্টা-১৭।

পাটঃ

এ সপ্তাহে বপন উপযোগী পাটের ভালো জাতগুলো হলো-সিসি-৪৫, বিজেআরআই দেশি পাট শাক-১, ফাল্গুনি তোসা,বিজেআরআই তোষা পাট-৪।

আলুঃ আলু সংরক্ষনে বেশি যত্নবান হতে হবে।এ ক্ষেত্রে আলু গাছের বয়স ৯০ দিন হলে মাটির সমান করে সমুদয় গাছ কেটে গর্তে আবর্জনা তৈরি করুন।এভাবে মাটির নিচে ১০ দিন আলু রাখার পর অর্থাৎ রোপনের ১০০ দিন পর আলু তুলতে হবে।এতে চামড়া শক্ত হবে ও সংরক্ষন ক্ষমতা বাড়বে।

শাকসবজিঃ

এ সপ্তাহে বসতবাড়ির আঙিনায় জমি তৈরি করে ডাটা,কলমিশাক,পুইশাক,করলা,ঢেড়স,বেগুন,পটল লাগাতে পারেন।

এছাড়া অনান্য সবজি বেগুন,লাউ,করলা, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো লাগাতে পারেন।

আগাম খরিপ-১ সবজির চারা উৎপাদন ও মূল জমি তৈরি করতে পারেন।

আমঃ আমের মুকুলে এ সময়ে অ্যান্থ্রাকনোজ রোগ  দেখা যায়,এক্ষেত্রে রোগ দমনে গাছে মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার পূর্ব পর্যন্ত আক্রান্ত গাছে প্রপিকোনাজল অথবা মেনকোজেব গ্রুপের ছত্রকনাশক পানিতে মিশিয়ে ভালো করে স্প্রে করতে হবে।

এছাড়া সুপ্রিয় কৃষক ভাইয়েরা

১।উচ্চমূল্যের ফসল আবাদ করুন,অধিক লাভবান হন।

২।সল্পকালীন ও উচ্চফলনশীল জাত নির্বাচন করুন,অধিক ফসল ঘরে তুলুন।

৩। শ্রম,সময় ও খরচ সাশ্রয়ে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে আবাদ করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top